কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫”
দেশের রাষ্ট্রীয় আয় সংগ্রহ ও সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলোর একটি হলো কাস্টমস-এক্সাইজ-ভ্যাট বিভাগ। এই সংস্থার মাধ্যমেই বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ হয়, ভ্যাট মাধ্যমিক আয় নিশ্চিত হয়, এবং দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষিত হয়। সেই দায়িত্ব পালনে কর্মী সংকট থাকলে সংস্থা কার্যকরভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে না। তাই ২০২৫ সালে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে “মেগা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি” প্রকাশ করায় অনেকই আগ্রহসহচর হয়ে উঠেছেন — ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য সুযোগ রয়েছে।
নিয়োগের প্রেক্ষাপট
২০১০-এর পর থেকেই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো জনবল বৃদ্ধি ও বয়স্ক কর্মী অবসরমূলক কারণে কর্মী ঘাটতির মুখে পড়ছে। বিশেষ করে রাজস্ব বিভাগের অধীনে কাজ করা অফিসে কর্মসংস্থান রাখা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই কারণে ২০২৫ সালে এই কমিশনারেট একাধিক শূন্য পদে পূর্ণাঙ্গ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, চট্টগ্রাম অঞ্চলের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে “পুরুষ ও নারী”, “২০২৫” এবং “অনলাইনে আবেদন” ইত্যাদি। KFPlanet English
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়সসীমাসহ শর্তাবলী
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে — আত্মীয়তা ও ভেদ ছাড়াই ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য আবেদনযোগ্য। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে সাধারণত সেট করা হয়েছে — এসএসসি, এইচএসসি বা অনুরূপ সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ থাকতে হবে, কিছু ক্ষেত্রে স্নাতক/সমমান থাকতে হবে। বয়সসীমা সাধারণ প্রার্থীর জন্য ১৮ থেকে ৩০ বছর। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রতিবন্ধী প্রার্থী ও নির্দিষ্ট কোটা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর পর্যন্ত শিথিল থাকতে পারে। ছাড়া শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে, নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে উচ্চতা, ওজন, দৃষ্টিসম্পর্কিত মান থাকতে হবে।
নিয়োগ প্রক্রিয়া
নিয়োগ প্রক্রিয়া সাধারণত নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে:
-
অনলাইন আবেদন ও আবেদন মূল্য পরিশোধ – আবেদন শুরু ও শেষ তারিখ নির্ধারিত থাকে, অনলাইনে ফরম পূরণ ও পেমেন্ট করতে হয়। যেমন এক বিজ্ঞপ্তিতে আছে- আবেদন করার সময়সীমা ২৭ অক্টোবর থেকে ১৭ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। Apply now
-
প্রাথমিক বাছাই ও লিখিত পরীক্ষা – মোটপক্ষে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান ও গণিত প্রশ্ন থাকতে পারে।
-
শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষা (যেসব পদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন) – উচ্চতা, ওজন, দৃষ্টি, দৌড় ইত্যাদি।
-
মৌখিক / বিচক্ষণতা পরীক্ষা – দলীয় আচরণ, মূল্যবোধ ও কাজে আগ্রহ যাচাই করতে।
-
চূড়ান্ত মেডিকেল পরীক্ষা ও ভেরিফিকেশন – নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যের পক্ষে ফিটনেস ও জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই।
সুযোগ-সুবিধা ও কেরিয়ারের দিক
এই নিয়োগের মাধ্যমে ছেলে-মেয়েরা পাবেন এক সুনামি সরকারি চাকরির সুযোগ, যাতে রয়েছে নিয়মিত বেতন, সরকারি অবসরভাতা, স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন সম্ভাবনা। যেহেতু কাস্টমস-ভ্যাট বিভাগের কর্মী হিসেবেই কাজ হবে — পেশাগত নিরাপত্তা রয়েছে, আত্মউন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। এমন কর্মক্ষেত্র যারা নিয়মিত জীবন, আত্মসম্মান ও দেশের সেবার যে উদ্দেশ্য খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি এক ভালো সুযোগ।
প্রস্তুতির পরামর্শ
যে প্রার্থীরা আবেদন করতে চায়, তাদের জন্য কিছু কার্যকর পরামর্শ দেওয়া হলো:
-
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর দ্রুত আবেদন ফরম পূরণ করুন — সময়মত আবেদনের মাধ্যমটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
-
শিক্ষাগত সনদ ও পরিচয়পত্র প্রস্তুত রাখুন — অনলাইন আবেদন ও পরবর্তী যাচাইয়ের জন্য স্ক্যান কপি ও হার্ড কপি প্রয়োজন হতে পারে।
-
লিখিত পরীক্ষার জন্য বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান ও গণিত অংশ নিয়মিত অনুশীলন করুন। পুরনো প্রশ্নপত্র ও মক টেস্ট খুব কাজে দেবে।
-
শারীরিক সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য দৈনিক ব্যায়াম, দৌড়, পুশ-আপ, স্কোয়াট ও হাঁটার অভ্যাস করুন।
-
সাক্ষাৎকার পর্যায়ে পেশাগত মনোনিবেশ, আত্মবিশ্বাস ও স্পষ্ট বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। চাকরির উদ্দেশ্য ও দায়িত্ব সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো।
-
অনলাইন ফরম পূরণের সময় তথ্য সম্পূর্ণ ও সতর্কভাবে দিন — ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে।
সমাপনী আলোচনা
“মেগা নিয়োগ” শব্দটি অনেকের কাছে আকর্ষক হলেও আসলে অর্থ দাঁড়ায় বৃহৎ পরিসরে একাধিক পদে একযোগে নিয়োগ দেওয়া। ২০২৫ সালে কাস্টমস-এক্সাইজ-ভ্যাট কমিশনারেটের এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছেলে ও মেয়েদের জন্য এক দারুণ সুযোগ। এটি সাধারণ চাকরির মাত্রায় নয় — দেশের আয়বৃদ্ধি ও বাণিজ্যিক নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বশীল বাহিনীতে যুক্ত হওয়া একটি গৌরবময় দায়িত্ব।
আপনি যদি এমন একটি ভবিষ্যৎ চান যেখানে দেশের সেবার পাশাপাশি নিজের কর্মজীবনে স্থিতি ও উন্নয়ন থাকবে, তাহলে এই বিজ্ঞপ্তি অনুপ্রাণিত হওয়া যেতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আসবে নিশ্চিতভাবেই—তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করুন। সঠিক সময়েই আবেদন করুন, নিজের যোগ্যতা যাচাই করুন, এবং নিশ্চিত করুন আপনার তথ্য পুরোপুরি সঠিক রয়েছে।
এই নিয়োগ সুযোগকে গ্রহণ করুন, কারণ এটি হতে পারে আপনার জীবনের একটি বড় মাইলফলক—সাধারণ চাকরির সংজ্ঞা ছাপিয়ে এক দায়িত্বশীল পেশার অংশীদার হওয়ার প্রথম ধাপ।
আবেদন করার নিয়ম (Step by Step)
ধাপ ১: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ
প্রথমে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
সাধারণত আবেদন করা হয় এই ঠিকানায়:
http://cevc.teletalk.com.bd
(বিজ্ঞপ্তির ওপর নির্ভর করে “cevr”, “cevh”, “cevctg”, “cevtax” ইত্যাদি সাব-ডোমেইনও থাকতে পারে।)
ধাপ ২: “Application Form” এ ক্লিক করুন
ওয়েবসাইটে গেলে “Application Form” বা “Apply Now” বোতাম দেখা যাবে। সেখানে ক্লিক করলে পদের তালিকা দেখাবে।
আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী পদ নির্বাচন করুন (যেমন: অফিস সহকারী, কম্পিউটার অপারেটর, সিপাহী ইত্যাদি)।
ধাপ ৩: আবেদন ফরম পূরণ
অনলাইনে আবেদন ফরমে নিচের তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করুনঃ
-
নাম (বাংলা ও ইংরেজি)
-
পিতা/মাতার নাম
-
জন্মতারিখ ও বয়স
-
জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
-
শিক্ষাগত যোগ্যতা
-
মোবাইল নম্বর (যেটিতে SMS পাওয়া যাবে)
-
স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা
-
ছবি ও স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি আপলোড
ছবির সাইজ: 300×300 পিক্সেল (সর্বোচ্চ 100 KB)
স্বাক্ষরের সাইজ: 300×80 পিক্সেল (সর্বোচ্চ 60 KB)
ধাপ ৪: ফরম সাবমিট ও ইউজার আইডি সংগ্রহ
সব তথ্য যাচাই করে “Submit” বোতামে ক্লিক করুন।
সাবমিট করার পর একটি Applicant’s Copy পাবেন, যেখানে ইউজার আইডি (User ID) লেখা থাকবে।
এটি ভালোভাবে সংরক্ষণ করুন, কারণ SMS-এর মাধ্যমে আবেদন ফি পরিশোধ করতে এটি প্রয়োজন হবে।
ধাপ ৫: আবেদন ফি জমা (Teletalk Prepaid SIM দিয়ে)
২টি SMS পাঠিয়ে আবেদন ফি পরিশোধ করতে হয় —
উদাহরণঃ
২য় SMS: CEVX<space>YES<space>PIN পাঠান 16222 নম্বরে
আবেদন ফি সাধারণত ১১২/- বা ২২৩/- টাকা (পদের উপর নির্ভর করে)।
SMS পাঠানোর পর আপনি “Payment Completed” নিশ্চিত বার্তা পাবেন।
ধাপ ৬: Admit Card সংগ্রহ
আবেদন শেষ হওয়ার পর লিখিত পরীক্ষার তারিখ ও Admit Card Download Notice ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
প্রার্থীরা teletalk.com.bd বা সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে Admit Card ডাউনলোড করতে পারবেন।
গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
-
আবেদনপত্রে ভুল তথ্য দিলে আবেদন বাতিল হতে পারে।
-
নির্ধারিত সময়ের পর আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
-
একবার সাবমিট করার পর তথ্য পরিবর্তন করা যায় না।
-
আবেদন করার সময় সক্রিয় মোবাইল নম্বর ব্যবহার করুন — SMS-এর মাধ্যমে সকল তথ্য পাওয়া যাবে।
-
প্রতিটি কমিশনারেটের জন্য আলাদা ওয়েবসাইট ও আলাদা বিজ্ঞপ্তি থাকতে পারে, তাই বিজ্ঞপ্তির নির্দেশনা ভালোভাবে পড়ুন।
